প্রোগ্রামিং কি? প্রোগ্রামিং কেন শিখবো?

প্রোগ্রামিং কি? প্রোগ্রামিং কেন শিখবো?

আসসালামু আলাইকুম, Blog Academy এর পক্ষ থেকে  আপনাকে স্বাগতম। ইতোমধ্যে আমরা  কোডিং তা জেনে ফেলেছি, না জানলে আপনি আগের পোস্টগুলো পড়ে আসতে পারেন। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয়ঃ প্রোগ্রামিং কি? প্রোগ্রামিং কেন শিখবো? কীভাবে শিখবো? ইত্যাদি ইত্যাদি।

প্রোগ্রামিং কি?

প্রোগ্রামিংঃ প্রোগ্রামিং বা কোডিং হল ধাপে ধাপে নির্দেশাবলীর একটি তালিকা যা কম্পিউটারগুলি আপনি যা করতে চান তা আপনাকে করতে দেয়। এক কথায় প্রোগ্রামিং বা কোডিং হল কম্পিউটারকে দেয়া আপনার নির্দেশ। বিস্তারিত  জানতে কোডিং কি? কোডিং বলতে কী বোঝায়? এই লিংকে ভিজিট করুন।

প্রোগ্রামিং কেন শিখবো?

আমি এই বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা করার আগে আপনার কাছে যদি জানতে চাই আপনি কেন এই নিবন্ধটি পড়তেছেন?
এর কয়েকটি কারণ থাকতে পারে যেমন ধরেন-

১। আপনি একজন সাধারন মানুষ যিনি এই প্রযুক্তির যুগে প্রযুক্তিগুলো কীভাবে কাজ করে সেই বিষয়ে জানতে চান।
২। আপনি প্রযুক্তিতে আগ্রহী।
৩। প্রযুক্তিকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন।
৪। সবেমাত্র এই পথে প্রবেশ করেছেন।
৫। অথবা আপনার সন্দেহ রয়েছে যে আপনি এই পথ বেছে নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন কি না।
৬। অথবা আপনি একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি এবং আপনি জানতে চান যে এই ক্ষেত্রটি বেছে নেওয়ার পরে আপনি কতদূরে এসেছেন।

প্রোগ্রামিং এর মাঠে প্রবেশের আগে প্রচুর লোকেরা জানতে আগ্রহী যে কীভাবে পর্দার আড়ালে প্রোগ্রামগুলো কাজ করে? অথবা গুগল কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কীভাবে আমরা যা খুজছি তা খুঁজে দেয়?  গুগল ম্যাপ কী সত্যই এই পৃথিবীর যে কোনও জায়গায় আমাদের নির্দেশনা দেওয়ার জন্য কাজ করে?

প্রোগ্রামিং শেখার আরও বেশ কিছু কারন আছে। তাদের মধ্যেঃ

প্রোগ্রামিং কেন শিখবো?
প্রোগ্রামিং কেন শিখবো?

১। আকর্ষণীয় বেতন এবং একাধিক কর্মক্ষেত্রের সুযোগ :

বিশ্বজুড়ে প্রোগ্রামারদের চাহিদা অনেক বেশি। আপনি যদি ভালো কোডিং করতে জানেন তবে প্রচুর কাজের সুযোগ রয়েছে। আপনি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারেন এবং অবাধে কাজ করে যেতে পারেন। অথবা আপনি বিভিন্ন সংস্থার হয়ে কাজ করতে পারেন।

আপনি নিজের প্রকল্পগুলিতে কাজ করতে পারেন। আপনি নিজের কোডিং দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আপনার নিজের স্টার্টআপ নিয়েও ভাবতে পারেন। একজন প্রোগ্রামার জানে কিভাবে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা এবং পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে হয় । যা অন্য সাধারন মানুষ পারে না যার কারনে একজন প্রোগ্রামার এর বেতনও আকর্ষণীয় হয় 😋 । এখানে একজন গুগলে চাকুরিপ্রাপ্ত লোকের কথা চিন্তা করতে পারন যে কিনা কাজ করে মাত্র কয়েক ঘন্টা আর বেতন পায় অনেক। বাংলাদেশেও একজন প্রোগ্রামার এর সেলারি মিনিমাম ৫০,০০০ টাকা। এর পাশাপাশি আপনি অনেক কর্মক্ষেত্রে চাকুরী করার যোগ্যতা রাখেন।

২। সমস্যা সমাধান ও যৌক্তিক দক্ষতা বিকাশে :

কোডিং আপনার মস্তিষ্ককে কোনও সমস্যা গভীরভাবে চিন্তা করতে বাধ্য করে। আর সে জন্য আপনার মস্তিষ্ক আপনার চিন্তাভাবনাগুলিকে সুসংগঠিত করে, কিছু যুক্তি প্রয়োগ করে এবং তারপরে একটি সমাধান সরবরাহ করে। যতবারই আপনি একটি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, আপনার নিজের মস্তিষ্ক ব্যবহার করা দরকার হয়। আপনাকে নিজের নিয়ম তৈরি করতে হয় এবং আপনাকে একটি যৌক্তিক পদ্ধতির অনুসরণ করতে হয়।
সুতরাং প্রোগ্রামিং শেখা এবং করা আপনার মস্তিষ্কের জন্য একটি অনুশীলন যা শেষ পর্যন্ত আপনার সমস্যা সমাধান এবং যৌক্তিক দক্ষতার উন্নতি করে। কোড শেখা আপনাকে জীবনে প্রতিদিন আমাদের যে সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় তা সমাধান করতে শেখায়। তাই এই পৃথিবীকে আপনার চিন্তা ভাবনার মাধ্যমে পরিবর্তনের 😋 জন্য আপনি প্রোগ্রামিং শিখতে পারেন।

“এই পৃথিবীর প্রত্যেকেরই কম্পিউটারের প্রোগ্রাম শিখতে হবে । কারণ এটি আপনি কীভাবে কাজ করবেন তা ভাবতে শেখায়” -স্টিভ জবস

৩। নিজের অন্যান্য দক্ষতা বিকাশ করুন :

কোডিংয়ের জ্ঞান আপনাকে অন্যভাবেও সহায়তা করতে পারে। কোডিং কেবল আপনার প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নত করে না, এটি আপনার অন্যান্য দক্ষতাও উন্নত করতে সহায়তা করে। কোডিং করার সময় আপনি বেশিরভাগ সময় একটি দলের সাথে কাজ করেন। তখন আপনাকে অন্য সহকর্মীদের সহযোগিতা করতে হয়, আপনাকে তাদের সাথে প্রকল্পের বিষয়ে আলোচনা করতে হয়, আপনাকে আপনার ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করতে হয় এবং এই সমস্ত জিনিসগুলি করার জন্য আপনাকে সহনশীলতা অবলম্বন করতে হয় । যা আপনাকে পেশাগত জিবনে কিংবা বেক্তিগত জীবনেও সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে সহায়তা করে।

৪। প্রযুক্তি বিশ্বকে শাসন করছে: এতে কোনও সন্দেহ নেই যে প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ হয়ে উঠেছে তা সে বিনোদন হোক বা যোগাযোগ কিংবা পরিবহন। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে পিছনে রেখে আমরা সামনে অগ্রসর হওয়ার কথা চিন্তাও করতে পারি না। সুতারং প্রযুক্তিকে সাথে নিয়ে চলাটা হবে আমাদের জন্য সবথেকে ভালো সিদ্ধান্ত। সো হ্যাপি কোডিং লাইফ😋।

৫। ক্ষমতায়ন এবং জীবন-পরিবর্তন অভিজ্ঞতা:

প্রোগ্রামিং সর্বদা আপনাকে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ এর মধ্যে ফেলে দেয় যেখানে আপনাকে প্রতিবারই ঝুঁকি নিতে হয় এবং এটি আপনাকে আপনার জীবনের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে ঝুঁকি নিতে শেখায়। বিভিন্ন সফ্টওয়্যার, অ্যাপস, কিংবা ওয়েবসাইট যখন নিজেই এই জিনিসগুলি আপনি তৈরি করবেন তখন নিজেকে আরও আত্মবিশ্বাসী এবং শক্তিশালী মনে হবে। যখন আপনি কোনও প্রোগ্রাম এর কোনও সমস্যা সমাধান করতে সক্ষম হবেন যার সমাধান আগে ছিল না, ওই সময় দেখবেন নিজেকে মান্না 😋 মনে হবে।
হারবাল এর বিজ্ঞাপন এর মতো করে স্যার – স্টিফেন হকিং এর কিছু কথা আমার মত করে বললে যা হয় তা হলো-
“আপনি মহাবিশ্বের গোপন রহস্য উদঘাটন করতে চান, বা আপনি কেবল একবিংশ শতাব্দীতে একটি ক্যারিয়ার অর্জন করতে চান, আজই শিখে ফেলুন বেসিক কম্পিউটার প্রোগ্রামিং 😋”।

৬। যে কেউ এটি করতে পারেন :

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী কোন ব্যক্তি না হয়েও, যে কেউ প্রোগ্রামিং করতে শিখতে পারে। এটি শিখতে কয়েক বছর সময় লাগে না বা হাজার হাজার টাকা খরচ করা লাগে না। প্রকৃতপক্ষে, এটি অনলাইনে এবং নিজের বাড়িতে আরামে থেকে এবং আপনার অন্যান্য কাজগুলির পাশাপাশি নমনীয়ভাবে শিখতে পারবেন।
বিঃ দ্রঃ- মিনিমাম ১ বছর হাতে সময় নিয়ে যদি শিখেন তাহলে খুব ভালো হয়।

 এই ছিল আজকের আলোচনা, সামনে আরও কথা হবে সে পর্যন্ত ভালো থাকবেন, আল্লাহ হাফেজ।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
2 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Md.Nayem Islam

প্রোগ্রামার হলে কি কোন CSE সার্টিফিকেট লাগে,,,চাকরীর সময়

Blog Academy

প্রোগ্রামার হতে হলে কোনো সি এস ই এর সার্টিফিকেট লাগে না। মুলতো আপনার প্রোগ্রামিং স্কিলস আপনাকে অন্য লেভেলে নিয়ে যাবে। তবে হ্যা, সার্টিফিকেট হলে সেটা বেশি ভাল। এবং যদি এই বিষয়ের উপর পড়ালেখা করে থাকেন তাহলে আরো প্রাথমিক থেকে শুরু করে গভীর জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন।

2
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x